Header Ads

Mohammad Emamul Hasan

পাপ প্রকাশের ভয়াবহতা এবং তওবার গুরুত্ব

 ❐ পাপ প্রকাশের ভয়াবহতা এবং তওবার গুরুত্ব


আমরা এমন এক সময়ে বাস করছি যেখানে পাপ করে বলে বেড়ানোটা smartness! প্রকাশ্যে বিভিন্ন পাপ কাজ করাটা যেন কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে! বিশেষ করে ইয়াং জেনারাশনের মধ্যে এটা বেশি পরিলক্ষিত হয় যে, তারা বন্ধুমহলে নিজের পাপের কথা নিজেরাই নির্লজ্জের মতো আলোচনা করে, ক্লাসে এসব নিয়ে আড্ডা মারে আর হাসি-তামাশা ও গল্প-গুজব করে। তাদের বড় ভাই ও আপুরা, এমনকি অনেক শিক্ষক ও অভিভাবকরা তাদের সাবধান করবে কী, উল্টো সমর্থন করে! হালাল-হারামের বাউন্ডারি তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। লজ্জাশীলতা যে ঈমানের অংশ [Bukhari 24], এটা তারা জানেই না! ব্যক্তিস্বাধীনতার নামে এখন ফ্রি-মিক্সিং, বেহায়াপনা ও অশ্লীলতাই আধুনিকতা! নাউযুবিল্লাহ! অথচ আল্লাহর কাছে পাপ মাফ হওয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো, পাপের কথা গোপন রাখা এবং কৃত পাপের জন্য তওবা ও ইস্তিগফার করা। আর কোনো বান্দার হক নষ্ট করলে তা পূরণ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা। পাশাপাশি যেই হালাল পদক্ষেপ গ্রহণ করলে পাপের ইচ্ছা ও রাস্তা বন্ধ হবে, খুব দ্রুত সেই ব্যবস্থা করা। [যেমন, কেউ যদি মনে করে যে, বিয়ে করলে গোপন গুনাহ ও ফিতনা থেকে নিজেকে সহজেই বাঁচাতে পারবে, তাহলে দ্বীনি কাউকে বিয়ে করে নেওয়া।] এভাবে ঈমানের সাথে তওবা করে ফিরে এলে ও সৎকাজ করলে আল্লাহ (ﷻ) শুধু মাফই করেন না, গুনাহগুলোকে সওয়াবে পরিণত করে দেন! সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ (ﷻ) বলেন–


◈ “তবে যে তওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, পরিণামে আল্লাহ (ﷻ) তাদের পাপগুলোকে পূণ্য দ্বারা প্রতিস্থাপন করে দেবেন। আল্লাহ (ﷻ) অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” [25:70]


কিন্তু আজ অনেক মুসলিম এটা জানে না বা বুঝতেই চায় না যে, কোনো গুনাহ করলে গুনাহর কথা কারও সাথে শেয়ার করা সম্পূর্ণ হারাম—এমনকি গুনাহ করার চেয়েও বড় গুনাহ হলো গুনাহর কথা কাউকে বলে দেওয়া! আর কারো দ্বারা মানুষজন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পাপাচারে অনুপ্রাণিত হলে, যত মানুষ তার পদচারণ অনুসরণ করে গর্তে পড়বে (গুনাহয় জড়াবে), সকলের গুনাহর ভার তার একাউন্টে জমা হবে! নাস্তাগফিরুল্লাহ! [‘আস্তাগফিরুল্লাহ’-এর বহুবচন] রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন–


◈ “যে ব্যক্তি সৎপথের দিকে ডাকবে সে তার সকল অনুসারীদের সমান সওয়াব পাবে। অপরদিকে যে ব্যক্তি ভ্রষ্টতার দিকে ডাকবে সে তার সকল অনুসারীদের সমান পাপের বোঝা বহন করবে।” [Muslim 2674 & Abu Dawud 4609]


এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জ্ঞাতব্য। কেউ যদি আল্লাহর অবাধ্যতায় বা কবিরা গুনাহয় লিপ্ত থাকে, ওপেনলি কোনো হারাম কাজ করে বা আল্লাহর নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করে, তাকে ফাসিক (evil doer) বলে—যা তাকে কুফরির দিকে নিয়ে যেতে পারে। ইসলামি কোর্টে ফাসিকের সাক্ষী গ্রহণযোগ্য নয়। আল্লাহ (ﷻ) বলেন–


◈ “হে ঈমানদারগণ, যদি কোনো ফাসিক (মিথাবাদি, আল্লাহর অবাধ্যতাকারী, কবিরা গুনাহগার) তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা তা যাচাই করে নাও। তা না হলে তোমরা অজ্ঞতাবশত কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতি করে বসবে, অতঃপর তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হবে।” [49:6]

[যেমন, টিভিতে ক্লিন শেভেড বা বেহিজাবি নিউজরিডারের খবর শুনে আজ নামধারী মুসলিমরা দাড়ি-টুপি-হিজাবওয়ালা মুসলিমদের অপছন্দ করে বা জঙ্গি ভাবে, প্রকৃত ইসলামকে মৌলবাদ বলে কটাক্ষ করে! নাউযুবিল্লাহ!]


কোনো অপকর্ম বা গুনাহর কাজ প্রকাশ্যে করলে অথবা গোপনে করে তা কাউকে বলে দিলে এর অনেক সামাজিক সমস্যা আছে। সবচেয়ে বড় ক্ষতি হলো, ধীরে ধীরে মানুষের মন থেকে সেই পাপবোধটা উধাও হয়ে যায়—মানুষ একটা পর্যায়ে সেই পাপটাকে আর পাপ মনে করে না! পাপটা তখন সবার কাছে নরমাল ও কমন ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় এবং নতুন প্রজন্মের কাছে তা সহজে গ্রহণযোগ্যতা পায়। দ্বিতীয়ত, সেই পাপকে কেন্দ্র করে আরও নতুন নতুন পাপের আবির্ভাব ঘটে ও বিভিন্ন বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, যা অপূরণীয় ক্ষতি বয়ে আনে। ফলে মানবজীবনে, পরিবারে ও রাষ্ট্রে শান্তি ও ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়।



Written by BEARDFUL


Muhammad Mustaqim





No comments

Theme images by hdoddema. Powered by Blogger.