স্যাকিউবাস (ম্যান সিডিউসার নারী জিন)
স্যাকিউবাস (ম্যান সিডিউসার নারী জিন)
আমরা সকলেই জানি ছেলেদের একটা সময় স্বপ্নদোষ হয়। এক্ষেত্রে কেউ কেউ অদ্ভুত স্বপ্ন দেখে থাকে। কেউ কেউ আবার দেখে তার পরিচিত বা অপরিচিত কারো সাথে মিলিত হচ্ছে। এবং এক পর্যায়ে তার স্বপ্নদোষ হয়ে যাচ্ছে। এই যে সে তার স্বপ্নে কোন নারীর সাথে মিলিত হতে দেখছে এটা মূলত একটি স্যাকিউবাস নামক নারী জিন। এই জিনটি পুরুষদের সাথে তার ঘুমের মধ্যে মিলিত হয় এবং তার স্বপ্নদোষ ঘটিয়ে দেয়। অনেকেই এই জিনের দ্বারা আক্রান্ত হয়।
এখন একথা শুনে হয়তো বা দুষ্ট প্রকৃতির ছেলেরা খুব খুশি হবে। এখানে খুশি হওয়ার কিছু নেই বরং আতঙ্কিত হওয়া দরকার। কারণ এই জিনের ক্রমাগত আক্রমণে একজন পুরুষ তার পৌরষত্ব হারিয়ে ফেলতে পারে। তার যৌন ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের যৌন রোগ দেখা দিতে পারে।
উপরোক্ত কথাগুলো কারও কারও কাছে অবিশ্বাস্য বা হাস্যকর মনে হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে ইসলাম কি বলে সে সংক্রান্ত একটি আর্টিকেল নিচে দিয়ে দিচ্ছি। এই দলিল সংক্রান্ত আর্টিকেলটি সংগৃহীত।
" মানুষের সাথে জ্বিনের শারীরিক সম্পর্ক বা সহবাস "ও লক্ষণ সমুহ।
এক ব্যক্তি শায়খ উসাইমীন র, নিকট এসে জিজ্ঞাসা করেন, জ্বিন কি মানুষের সাথে শারীরিক সম্পর্ক লিপ্ত হতে পারে? উত্তরে শায়খ উসাইমীন র, এই আয়াত উল্লেখ করেন।
فِيهِنَّ قَاصِرَاتُ الطَّرْفِ لَمْ يَطْمِثْهُنَّ إِنسٌ قَبْلَهُمْ وَلَا جَانٌّ
তথায় থাকবে আনতনয়ন রমনীগন, কোন জিন ও মানব পূর্বে যাদের ব্যবহার করেনি। [ সুরা আর-রহমান -৫৬ ]
এবং বলেন জ্বিন মানুষের সাথে শারীরিক সম্পর্কে করতে পারে।
ইবনুল জাওযী (রহঃ) এই আয়াতে ব্যাখ্যায় বলেন, এই আয়াতে দলীল রয়েছে যে, জিনের সাথে মানুষের এবং মানুষের সাথে জিনের শারীরিক মিলন সম্ভব
(যাদুল মাসীর ৪/২১৪)।
ইবনে তাইমিয়া র, বলেন, জ্বিন এবং মানুষের সাথে শারীরিক মিলন সম্ভব
(মাজমাউল ফাতওয়া - পৃষ্ঠা -৩৯)
ইমাম সয়ূতি র, বলেন মানুষের সাথে জ্বিনের শারীরিক সম্পর্ক করা সম্ভব ( আল আলাম পৃষ্ঠা -৩০১)
জ্বিন কার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করলে সাধারণত যে লক্ষ্যগুলোর দেখা যায়।
(১)ঘুমের মধ্যে (মানে স্বপ্নদোষের সময়- তখন অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হয়)এটা অনেক সময় বদনজরের বা যাদুগ্রস্ত হলে অতিরিক্ত সপ্নদোষ হয়। নারী পুরুষ উভয়ের হয়।
(২) জেগে থাকা অবস্থায় (রোগি শুয়ে থাকে কিন্তু সাময়িকের জন্য অবশ হয়ে যায় বিশেষ করে হাত-পা,,,আর জ্বীন যখন তার সংগে মিলন করে যা রোগি বুঝতে পারে) কিন্তু কাউকে ডাক দেওয়া বা কিছু করার উপায় থাকেনা।
(৩) জেগে থাকা অবস্থায় মিলন করতে পারে এবং এই সময় জ্বীনকে রোগি দেখতেও পারে, নাও দেখতে পারে। তবে অনুভব হয়।
(৪) কোন জ্বীন যদি কোন মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার উদ্দ্যেশেই আছড় করে তাহলে মেয়ের গায়ের বিভিন্ন জায়গায় দাগ থাকে,,এই দাগ মাঝে মাঝেই মেয়ের গায়ে দেখা যায়,,,শারীরিক সম্পর্ক না হলেও এরকম দাগ দেখা যাবে,,লাল দাগ,, খামচি বা কামড়ের দাগ,, বিশেষ করে গলার নিচের দিকে।
(৪) কোন জ্বীন যদি কোন মেয়েকে পছন্দ করে তখন ওই জ্বীন সবসময় মেয়ের আশেপাশে থাকে,, যখন ঘুমায় তখন আসে, ঘুমের মধ্যেই শারীরিক সম্পর্ক করে,, মেয়ে তখন বাস্তবতা অনুভব করতে পারে কিন্তু কাউকে দেখে না ও বলার মতো অনুভূতি শক্তি থাকেনা।
(৫) জ্বীন যদি পুরুষ হয় আর পুরুষ জ্বিন দ্বারা আক্রান্ত হলে সেই সকল মেয়েদের স্মৃতি শক্তি কমে যায়, খাওয়ার অনিহা সৃষ্টি হয়, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।
(৬) পড়াশোনার প্রতি, সংসারের প্রতি অমনোযোগী হয়ে যায়।
(৭)পুরুষ জ্বীন দ্বারা আক্রান্ত মেয়েরা সাধারণত পুরুষদের পছন্দ করেনা, একাকী থাকতে পছন্দ করে, বিবাহিত মেয়েরা স্বামী থেকে দুরে থাকতে পছন্দ করে।
(৮) জেগে থাকা অবস্থায়( হস্তমৈথুনের মাধ্যমে)নারী, পুরুষ উভয়ই একি রকম ,,এসময় জ্বীন রোগির হাত,মস্তিষ্ক পজেস করে ইন্দ্রিয়তৃপ্তি লাভ করে,,এটা তখনই বোঝা যাবে যখন কেউ আগে থেকেই গুপ্ত অভ্যাসে লিপ্ত ছিল কিন্তু তা অল্প পরিমানে,হঠাৎ করে যদি মাত্রাতিরিক্ত ভাবে যৌন চাহিদা বেড়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে আশিক জ্বীনের কাজ এটা, তবে বশীকরণ বা আসক্তকারি বা অনুগত যাদুর লক্ষন হচ্ছে, স্ত্রী বা স্বামীর সংগে সহবাসের ঘন ঘন ইচ্ছা জাগা, কিন্তু যারা অবিবাহিত তারা যদি আশিক জ্বীন দ্বারা আক্রান্ত হয় তাহলে তাদের যৌন উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয় আশিক জ্বীন,,ফলে যুবক যুবতীরা হারামে লিপ্ত হয়,,আর অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া যায়।
(৯) জ্বীন মানুষের সংগে মিলনের সময় যৌনাঙ্গে গরম বাতাসের মত অনুভূত হয়,,জ্বীনরা দীর্ঘক্ষণ সঙ্গম করে,,তাই এই সঙ্গমের পরে মেয়েরা দুর্বল হয়ে যায় খুব,শুকিয়ে যায় অনেক ধীরে ধীরে,, শরীরে ব্যথা অনুভব করে অনেক,,এসব লক্ষণ নারী পুরুষ সকলের,,অনুভব হয়।
(১০) অবিবাহিত মেয়ের সাথে জ্বীন শারীরিক সম্পর্ক করলে সেই মেয়ে বিয়ে বসতে চায় না,,আর বিবাহিত মেয়ের সাথে এরকম কিছু হলে সেই মেয়ে স্বামীর সাথে মিলনের আগ্রহ হারিয়ে ফেলে অনেক সময়। ইত্যাদি, আরও অনেক। সংগৃহীত আর্টিকেলটি শেষ হলো এবার আসুন এই সমস্যা থেকে পরিত্রান পাওয়ার উপায় গুলো সংক্ষেপে জেনে নেই।
এসব থেকে বাঁচতে হলে রাতে অজু করে ঘুমাতে হবে এবং আয়াতুল কুরসি পড়ে ডান কাত হয়ে শুতে হবে। অশ্লীল জিনিস দেখা ও চিন্তা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। রাতে অতিরিক্ত খানা খাওয়া যাবেনা এবং খাওয়ার সাথে সাথে শুয়ে পড়া যাবে না। খাওয়ার পর ৪০ কদম হাটা হাটি করে তারপর বিছানায় যেতে হবে। আর যদি কারো সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে তবে তাকে রুকিয়া অর্থাৎ কুরআনিক চিকিৎসা করাতে হবে। এক্ষেত্রে একজন ভালো রাকির (যিনি কোরআন দ্বারা চিকিৎসা করেন) সাথে যোগাযোগ করতে হবে। তিনি যদি বুঝতে পারেন আপনি জিন বা যাদু দ্বারা আক্রান্ত, তাহলে তিনি সেভাবেই আপনার চিকিৎসা করবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।
No comments