ইস্তেখারার মাধ্যমে জ্বীন-যাদুর রোগ নির্ণয় নাকি শাইতান পূজা…?
ইস্তেখারার মাধ্যমে জ্বীন-যাদুর রোগ নির্ণয় নাকি শাইতান পূজা…?
জ্বীন-যাদু বা প্যারানরমাল সমস্যা আছে কিনা? নির্দিষ্ট একটা রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সেটার জন্য মেডিকেল ট্রিটমেন্ট নিতে হবে নাকি ঝাড়ফুঁক করতে হবে? অনেকে এসব বিষয় জানার জন্য বিভিন্ন হুজুরদের মাধ্যমে ইস্তেখারা করান!! আর হুজুররাও ইস্তেখারার নাম ভাঙ্গিয়ে দিব্বি রোগ ও রোগের কারণ নির্ণয় করে এসব সমস্যার সমাধান দিয়ে যাচ্ছেন!! ওল্লাহি আল্লাহর কসম এটা ইস্তেখারা নয় বরং এটা শাইতান পূজা এবং শাইতানকে হারাম ও গুনাহের কাজের মাধ্যমে সন্তুষ্ট করে তার সাহায্য নিয়ে রোগ নির্ণয়ের একটা কবিরাজি পদ্ধতি। এটার সাথে শরয়ী ইস্তেখারার ন্যূনতম কোন সম্পর্ক নেই। • কারণ ইস্তেখারা মানে হলো- কোনো কাজ করার ইচ্ছা করলে কিংবা অত্যাসন্ন কোনো বিষয়ে আল্লাহর সাহায্য কামনা করতে তাঁরই দরবারে কায়মনোবাক্যে বিশেষ পদ্ধতিতে দুআ করে কল্যাণ কামনা করা। • অর্থাৎ ইস্তেখারার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনা করে যে, আমি যা করতে চাই তাতে যদি আমার কল্যাণ থাকে তাহলে তা আমার জন্য সহজ করে দিন এবং বরকত দান করুন। আর যদি তাতে কল্যাণ না থাকে তাহলে তা থেকে আমাকে বিরত রাখুন এবং যাতে আমার কল্যাণ তা-ই আমাকে দান করুন। এটিই হল ইস্তেখারা ও ইস্তেখারার বাস্তবতা। • ইস্তেখারার জন্য দুটি কাজ করণীয় বলে সহীহ হাদীসে বলা হয়েছে। ১/ দু’ রাকাত নামায আদায় করা। ২/ ইস্তেখারার প্রসিদ্ধ মাসনূন দুআটি মনোযোগের সাথে পড়া। আর এই দুটি কাজ নিজেকেই করতে হবে। নিজে না করে অন্যকে দিয়ে ইস্তিখারা করানো যেমনঃ- অনেকে মসজিদের ইমাম সাহেব অথবা পরিচিত কোনো আলিমের কাছে ইস্তিখারার আবেদন করে থাকেন। এটা সম্পূর্ণ ভূল এবং বর্জনীয় একটি কাজ। • এই সংক্ষিপ্ত আলোচনা থেকে আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে, সমাজের হুজুররা ইস্তেখারার নামে যা করছেন সেটা শরয়ী ইস্তেখারা নয়। আর “ইস্তেখারার মতো গুরুত্বপূর্ণ এই আমলটি” রোগ নির্ণয় করা এবং চিকিৎসা বাতলিয়ে দেওয়ার জন্য রাসূল ﷺ আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য নিয়ে আসেন নি। • এখন কথা হলো ইস্তেখারা করার পরে হুজুরেরা মানুষের সামনে যে রেজাল্ট প্রকাশ করে সেটা কিভাবে? এটা সম্পর্কে মূলত তথ্য হচ্ছে, ১/ এই হুজুরেরা সকলেই জ্বীনে আক্রান্ত এবং তাদের শরীরে সাহির, কাহিন বা যাদুকর কোন কিবারুশ শাইতান থাকে। যে তাকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে। ২/ অথবা তারা কোন কিবারুশ শাইতানের আনুগত্য বা পূজা করে এবং ভোগ দেয় বিনিময়ে তার মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একটা রেজাল্ট সে মানুষকে দিয়ে থাকে। এদেরকে হাদিসের ভাষায় عرّاف বা আররফ বলা হয়। • এদের নিকট গেলে এবং এরা যা বলে তা বিশ্বাস করলে ৪০ দিন বা রাতের ইবাদত আল্লাহ কবুল করবেন না। আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যারা এদের নিকট যায় এবং তারা যা বলে তা বিশ্বাস করে সে রাসূল ﷺ এর উপর যা কিছু আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে সেগুলোকে কুফরি করলো বা অস্বীকার করলো। إسناده صحيح • أخرجه أبو داود (٣٩٠٤)، والترمذي (١٣٥)، والنسائي في «السنن الكبرى» (٩٠١٧)، وابن ماجه (٦٣٩) • ঠিক তেমনিভাবে যারা হাজিরা দেখে তাদের বিষয়টাও সেইম। • আল্লাহ সকল মুসলিমদেরকে এদের অনিষ্ঠতা, ক্ষতি এবং প্রতারণা থেকে হেফাজত করুন।collected
No comments